তিন মাসেরও লম্বা লকডাউন শেষে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত খোলার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সব প্রতিষ্ঠানই ধীরে ধীরে ভারসাম্য ফিরে পাওয়ার পথ খুঁজছে। এই দীর্ঘ সময় প্রায় সব ধরনের অফিস ও ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে অনেককেই লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে।
লকডাউনের পর তাই প্রায় সব কোম্পানিরই মূল লক্ষ্য এখন সেলস বাড়ানো। এই প্রতিযোগিতার মাঝে কীভাবে নিজের ব্র্যান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন ভাবছেন তো?
নিচের ৪টি উপায় হতে পারে আপনার উত্তর।
যে কোনো ব্র্যান্ডকে ক্রেতার সামনে তুলে ধরার জন্য মার্কেটিং-এর কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে এমন সঙ্কটের সময়ে। মানুষের আচার-আচরণ এবং কেনাকাটা সবকিছুতেই যখন দ্রুত পরিবর্তন আসছে, যথাযথ প্রচারণা শুধু আপনার ব্র্যান্ডকে পরিচিতিই এনে দেবে না, আপনার পণ্যের বিক্রিও বাড়াবে। যে কোনো পণ্য কেনার প্রথম শর্ত হচ্ছে সেই পণ্য সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা। মার্কেটিং যত বেশি হবে, আপনার পণ্য সম্পর্কে ক্রেতার ধারণাও তত মজবুত হবে।
নিঃসন্দেহে, এই সময়ে বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা কঠিন। কিন্তু খরচ কমাতে প্রচারণা বন্ধ করে দেওয়া হয়ে দাঁড়াতে পারে আপনার কোম্পানির জন্য আরও বড় লোকসানের কারণ।
পুরো পৃথিবীই গত ছ’ মাসে বিশাল একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটা মানুষই নিজের চিন্তা-ভাবনা এবং অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছেন।
ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা নিশ্চিত করতে হলে ক্রেতাদের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিবর্তন আনতে হবে ক্যাম্পেইনেও। তাই লকডাউন পরবর্তী সময়ে আপনার ব্র্যান্ডের প্রচারণার জন্য নতুন করে যথাযথ পরিকল্পনা গড়ে তুলুন যাতে করে আপনার মেসেজ ক্রেতাদের কাছে প্রাসঙ্গিক হয়।
কম-বেশি সবার ওপরই দীর্ঘদিন দোকানপাট, অফিস বন্ধ থাকার বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বেশির ভাগ মানুষেরই এখন বাড়তি খরচ করার অবস্থা নেই, অনেকের জন্য পরিবারের দৈনন্দিন খরচ চালানোও হয়ে উঠেছে কষ্টকর। এরকম অবস্থায় দামি বা বিলাসবহুল পণ্যের বিক্রি কম হওয়াই স্বাভাবিক।
আপনার ব্র্যান্ডের পণ্য যদি এই পরিস্থিতে উপযোগী না হয় তাহলে এই সমস্যাকে নতুন কিছু তৈরির সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। খাবার-দাবার থেকে শুরু করে বাসের ভাড়া সবকিছুই যখন বাড়ছে, সাশ্রয়ী মূল্যের একটি আবশ্যক পণ্য সেলসের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে।
মার্কেটিং বাড়ানোর পাশাপাশি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য সঠিক মাধ্যমটি বেছে নেওয়াও একইভাবে জরুরি।
সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে সামনে আরও অনেক দিন সব ধরনের জনসমাগম, খেলাধুলা ইত্যাদি ইভেন্ট বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সিনেমা থিয়েটার বা শপিং মলেও আগের মতো ভীড় হবে না। অদূর ভবিষ্যতে বড় কোনো ইভেন্টের স্পন্সরশিপের মাধ্যমে প্রচারণার সুযোগ আসছে না। যে কোনো স্বাস্থ্য সচেতন মানুষই নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না।
অন্যদিকে, যানবাহন মানুষের নিত্য প্রয়োজনের অংশ। জরুরি দরকারে অফিস কিংবা বাজার - যেখানেই যেতে হোক না কেন, যানবাহন লাগবেই। সামাজিক দূরত্বের কারণে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের বদলে রাইড শেয়ারের জনপ্রিয়তাও বাড়বে। এ অবস্থায় অন্যান্য বিজ্ঞাপন মাধ্যমের বদলে ট্রানসিট বিজ্ঞাপনই হবে বেশি কার্যকর।
বিশ্ব অর্থনীতির এই দুঃসময়ে হতাশ হয়ে থেমে না পড়ে এগিয়ে চলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই নতুন পরিস্থিতির সাথে যে যত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে সে-ই হবে সফল।